
ঢাকা, বাংলাদেশ – প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর দেশব্যাপী অবরোধের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগ এনেছে বিএনপি। সরকার নির্বাচনে কারচুপি করেছে এবং ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে দলটি।
আগামী ২ নভেম্বর সড়ক, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। ওই দিন সাধারণ ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছে দলটি।
সরকার বিএনপিকে অবরোধ না করার জন্য সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বিএনপির অবরোধের আহ্বান সহিংসতা ও অর্থনীতিতে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে। অবরোধটি পণ্য ও মানুষ পরিবহনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি প্রয়োজনীয় সরবরাহের ঘাটতিও হতে পারে।
বিএনপির অবরোধ ও অন্যান্য ধরনের প্রতিবাদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ২০১৪ সালে, দলটি ৬০ দিনের অবরোধ পালন করেছিল যা ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়েছিল।
বিএনপি অবরোধ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছে সরকার। সরকার আরও বলেছে, বিএনপি ২০২৩ সালে দেশকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে।
বিএনপি সরকারের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলটি বলেছে যে তারা কেবল দুর্নীতিগ্রস্ত ও কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের চেষ্টা করছে।
বিএনপির অবরোধের ডাক দেশকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। কেউ কেউ অবরোধকে সমর্থন করে বলছেন, পদত্যাগের জন্য সরকারকে চাপ দেওয়া দরকার। অন্যরা অবরোধের বিরোধিতা করে বলেছে যে এটি অর্থনীতির ক্ষতি করবে এবং জনগণের অপ্রয়োজনীয় দুর্ভোগের কারণ হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপির অবরোধে ভয় পাওয়া যাবে না। সরকার বলেছে যে তারা আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জনগণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
অবরোধ ছাড়াও নভেম্বর মাসে আরও বেশ কয়েকটি বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এই বিক্ষোভগুলির মধ্যে রয়েছে:
সরকারের পদত্যাগ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির এই বিক্ষোভ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃশ্যপটে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। অবরোধের ফলে ব্যাপক বিঘ্ন ও ঘাটতি দেখা দিতে পারে এবং অন্যান্য বিক্ষোভ দেশকে আরও বিভক্ত করতে পারে।
এখন দেখার বিষয় বিএনপির এই আন্দোলনের প্রতি সরকার কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে। সরকার বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করতে পারে, অথবা বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করতে পারে। এটাও সম্ভব যে সরকার নতুন নির্বাচন করতে সম্মত হতে পারে।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি তরল এবং অপ্রত্যাশিত। আগামী কয়েক সপ্তাহ দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হবে।